🔖 আত্মার_অন্তরালে

✍️ লেখক: [প্রীতি_আক্তার_পিহু]
📖 পর্ব: [০ ৯ ]
Golper Alo ব্লগে আপনাকে স্বাগতম, এখানে আপনি পাবেন সেরা ভালোবাসার গল্প।
👉পর্ব (০ ৯ ) আত্মার_অন্তরাল রোমান্টিক গল্প । লেখক _প্রীতি_আক্তার_পিহু
হি ইজ দা কিং অফ ডার্কনেস ড্রেভেন হানটার।" সঙ্গে সঙ্গে ছেলেগুলোর চোখ যায় মুখোশধারী লোকটির বুকে বা পাশে জ্বলজ্বল করা D.H অক্ষরের দিকে। ছেলেটি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে, _"প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমাদেরকে ছেড়ে দাও। আমরা বাঁচতে চাই দয়া করে আমাদের কে মেরো না। " মুখোশধারী লোকটি উচ্চস্বরে হাসতে থাকে তার হাসির আওয়াজে চারপাশের দেয়াল কেমন যেন কেঁপে ওঠে। সে পুনরায় শীতল কণ্ঠে বলে, _"আমি ধ্বংসের জন্যই সৃষ্টি,আর ধ্বংস করতেই জানি।দুর্বলরা ক্ষমা করে, আর আমি দুর্বল নই।তোরা আমার হার্টের দিকে তাকানোর দুঃসাহস করেছিস। সি ইজ মাই হার্ট,আমার হৃদয়ের দিকে যারা তাকাবে তাদের মৃত্যু এই ড্রেভেনের হাতে লেখা থাকবে। ড্রেভেনের খাতায় ক্ষমা বলে কিছু নেই আছে শুধুই মৃত্যু আর ধ্বংস!" এরপর আর কোন কথা না। একে একে গার্ডগুলা বাকি ছেলে দুইটা শরীরে কেরাসিন ঢেলে দিতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ছেলেগুলো উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে। মুখোশধারী লোকটি পকেট থেকে ভারী গোল্ড-প্লেটেড মেটাল লাইটার বের করে। এর ওপর বড় করে হীরা দিয়ে খোদাই করা "Dreven Hunter" নামটি। সে ঠান্ডা হাতে ঢাকনাটি খুলে,আর মুহূর্তের মধ্যে জ্বলজ্বল করে উঠল আগুনের শিখা।ছেলেগুলো শরীরে আগুন ধরে গেল।গলাকাটা মুরগীর মত ছটফট করতে থাকে তারা। চারদিকে মাংস পোড়ার বীভৎস গন্ধ আসছে। তাদের গগনবিদারী চিৎকার কক্ষে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। কিন্তু মুখোশধারী লোকটি তবুও নির্বিকার।ধীরে ধীরে ছেলে দুটোর শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আগুনের শিখায় পুড়ে নিঃশেষ হয়ে গেল। মুখোশধারী লোকটির মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে ওঠে। সে এবার বিড়বিড় করে বলতে থাকে, _ "মাই গোল্ডমেরি তুমি শুধু এই ড্রেভেন হানটারের এর হৃদয়। আর ইউ রেডি মাই হার্ড, টু বি দ্যা কুইন ওফ মাই ডার্ক ওয়ার্ল্ড? আই উইল বি ব্যাক টু ইউ সুন মাই হার্ট।" ** সকালের রোদ উঠতে দেরি হয়নি কিন্তু আনায়ার শরীরের অবস্থা এমন যে সূর্যের আলোয়ও ঠান্ডা লাগছে। জ্বরের ঘোরে শরীরটা কাঁপছে, মাথাটা ভারী লাগছে, আর এক অদ্ভুত দুর্বলতা তাকে ঘিরে ধরেছে।ঘুম ভাঙার পর আনায়া তীব্র মাথা যন্ত্রণায় ছটফট করে।ঘরের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসছে তাই ধীরে ধীরে রুম থেকে বের হয়। কালকে রাতে বৃষ্টি ভেজার কারণে শরীরটা একটু খারাপ করেছে তার।বুকের মধ্যে চাপা একটা যন্ত্রণা নিয়ে ছাদে এসে দাঁড়ায়।সকালবেলার বাতাসটা বেশ হালকা কিন্তু আজ আনায়ার শরীর ভেঙে পড়ছে। হাতের আঙুলগুলো ঠান্ডা হয়ে আছে, ঠোঁট শুকিয়ে খসখসে। চোখের নিচে ক্লান্তির ছাপ, চুল এলোমেলো, আর চোখ দুটো অদ্ভুত রকমের ধোঁয়াটে হয়ে আছে। ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকার সময় পেছন থেকে কণ্ঠস্বর শোনা গেল, "আঁশ কাঠির মতো দাঁড়িয়ে কী ভাবছিস?" আনায়া বিরক্ত হয়ে চোখ বন্ধ করে একটু শ্বাস নেয়। এটাই আশা করেছিল তানহা ঠিক তার সামনে এসে দাঁড়াবে। "তুমি এখানে কী করছো আপু?" তানহা হেসে উত্তর দেয়, "তোর মতো আমিও ছাদে হাঁটতে আসছি। তবে তোর চেহারার এই হাল কেন? দেখে মনে হচ্ছে ছ্যাকা খেয়েছি হ্যাঁ?" আনায়ার রাগে শরীর জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে, "এসব কী বলছ তুমি আপু?মাথা ঠিক আছে তোমার? প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও।" "আমার মাথা ঠিকই আছে কিন্তু তোর হাব বাভ একটু ঠিক মনে হচ্ছে না আমার।নিজের নজরকে সংযত রাখ আনায়া।অন্যের জিনিসকে হাত বাড়ানো একটুও শোভা দেয় না তোকে মনে রাখিস।" আনায়ার রাগ বেড়ে যায়। চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ থাকলেও ভেতরের ক্ষোভটা যেন তার কণ্ঠস্বরকে তীক্ষ্ণ করে তোলে, "পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি? যখন যা ইচ্ছা তাই এসে আমাকে শুনিয়ে দিয়ে যাও। আমি কেন অন্য জিনিসের দিকে হাত বাড়াতে যাব হ্যাঁ?আমাকে এসব কথা বলার অধিকার তোমার নেই বুঝলে?" তানহা উচ্চস্বরে হাসতে থাকে। পুনরায় ব্যঙ্গ করে বলে, "ও আচ্ছা তাই নাকি অবুঝ মনে করিস আমাকে? কিছু বুঝিনা তাই না? ইউভান সে আমার ফিয়ান্সে বুঝলি? "তো সেটা আমাকে কেন বলছো? ইউভান ভাই তোমার কি হলো বা না হলে তাতে আমার কি যায় আসে?" তনাহা দু কদম এগিয়ে আসে তারপরও আনায়ার কাঁধে হাত রেখে গম্ভীর কণ্ঠে বলে, "আহারে কষ্ট হচ্ছে? তবুও বলছি ইউভান তোর কিছু ছিল না আর ভবিষ্যতেও থাকবে না। এটা মেনে নে সে শুধু আমার।" আনায়া আর সহ্য করতে পারলো না। এসব কথা তীরের মতো বেঁধছে তার অন্তরে।জ্বরের দুর্বলতা আনায়াকে কাহিল করে ফেলেছে, অথচ রাগের তীব্রতা শরীরের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ে।সে রেগে পেছনে ঘুরে চলে যাওয়ার সময় তানহা হঠাৎ তার হাতটা খপ করে ধরে ফেলে। আনায়া চমকে উঠে হাত ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে। "তুমি কী করছো?হাত ছাড়ো।" কিন্তু ঠিক তখনই, তানহা হঠাৎ করে একদম নাটকীয়ভাবে চিৎকার দিয়ে পা পিছলে যাওয়ার ভান করে। "আহ।" তানহা একদম নিচে পড়ে যেতে যেতে রেলিং ধরে ফেলে, মুখে আতঙ্কের ছাপ। যেন সে ভারসাম্য রাখতে পারছে না।এমন সময় ছাদের দরজা খুলে যায় আর ইউভান সেখানে এসে দাঁড়ায়।তানহার চোখ চকচক করে উঠলো। মুহূর্তের মধ্যে সে তার অভিনয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিলো। তানহা কান্নার সুরে বলে উঠল, "ইউভান দেখুন না আনায়া আমায় ধাক্কা দিয়েছে।আমিতো শুধু ওর সঙ্গে কথাই বলতে এসেছিলাম।" ইউভানের ভ্রু কুঁচকে গেল। তখনই তার চোখ আনায়ার দিকে পড়তেই তার মুখের অভিব্যক্তি বদলে যায়।আনায়া ইউভানের দিকে একবারও তাকায় নাহ।আনায়া তখনো রাগে কাঁপছে কিন্তু তার শরীর টলছে। জ্বরের তাপে সে ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছে না।ঠিক তখনই ইউভান কোনো কিছু চিন্তা না করেই এগিয়ে এসে আনায়ার হাত ধরে ফেলে।আনায়ার শরীর তখন একেবারে আগুনের মতো গরম হয়ে আছে। ইউভানের যেন নিশ্বাস আটকে আসে সে অস্থির কন্ঠে শুধালো, "তোর শরীর এত গরম কেন আনু?" আনায়া কোন কথার উত্তর দেয় না তার চোখ বুজে আসছে। আনায়া একটু পেছনে সরে যেতে চইলেও পারে না। শ্বাস নিতে পারছে না বুকের মাঝে ধুকপুকানি বাড়তে লাগে তার। "ঠিক আছি আমি।ছাড়ুন আমাকে ইউভান ভাই।" কিন্তু ইউভান উদ্বিগ্ন হয়ে আরো আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরল আনায়াকে।ইউভানের স্পর্শ পেয়ে শিরদাঁড়ায় এক অদৃশ্য স্রোত বয়ে যায় আনায়ার। এহেন দৃশ্য দেখে তানহা রেগে ফায়ার। সে আশা করেছে ইউভান কেবল তার দিকেই নজর দেবে, কিন্তু এখন সে আনায়ার শরীরের দুর্বলতার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।তানহা এবার তাদের ডাক চেপে বলে ওঠে, "আনায়া আমাকে ফেলে দিয়েছে ইউভান।আমি এর শেষ দেখতে চাই ওর মধ্যে কোন ভদ্রতা নেই।ওর সাহস কি করে হয় আমাকে ঠেলা মেরে ফেলে দেওয়ার?" ইউভান একরাশ বিরক্তি নিয়ে তানহার দিকে তাকায়। আনায়ার শরীর এমনিতেই দুর্বল তার উপর আবার তানহার আচরণ দেখে রাগটা একটু একটু করে বেড়ে যাচ্ছে। সে কিছুই করেনি, অথচ তানহা এমন অভিনয় করছে যেন তাকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে।ইউভান সরু কন্ঠে আনায়ার দিকে তাকিয়ে বলে, "এটা তোর কাজ?তানহার এই অবস্থা তুই করেছিস? তোর শরীরে এত শক্তি কোথা থেকে এলো হ্যাঁ?নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছিস কখনো? তুই জ্বরে কাঁপছিস, আর তানহাকে ফেলার পরিকল্পনা করিস?তোর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তোকে ফু দিলে উড়ে পড়ে যাবি নিচে।" আনায়া ক্লান্ত দৃষ্টিতে তাকায় ইউভানের পানে।রাগ দুর্বলতায় তার সমস্ত শরীর থর থর করে কাঁপছে।তীব্র ক্ষোভ তার বুকের মধ্যে গহিনে জমা হচ্ছে।সেই মুহূর্তে ক্লান্ত গলায় বলে ওঠে, "আমি কিছু করিনি ইউভান ভাই বিশ্বাস করুন।" ততক্ষণে তানহা গর্জে ওঠে বলে, "ছি আনায়া ছি মিথ্যা কথা বলতে লজ্জা করে না তোর? কিভাবে পারলে নিজে বড় বোনকে ধাক্কা মেরে ফেলতে হয়?" আনায়ার গা পুড়ে যাচ্ছে মাথাটা ভারী হয়ে আছে। সে জানে শরীরটা দুর্বল হয়ে পড়েছে কিন্তু সেটা দেখানোর মানুষ সে না।আনায়া কাঁপা কাঁপা কন্ঠে ইউভানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে, "ইউভান ভাই আ আমি.... " আর কিছু বলতে পারেনা আনায়া।তার আগে ইউভান ধমক দিয়ে ওঠে, "চুপ একদম চুপ! অনেক বড় কলিজা হয়ে গিয়েছে না তোর? টেনে ছিড়ে দিয়ে ওটা?কোন সাহসে নিজের হাতে এই বস্তাকে ধাক্কা মারলি বল?বাসায় কি গার্ডের অভাব পড়েছে? তোর যদি ধাক্কা মারার ইচ্ছাই হয় তাহলে গার্ডদের বললি না কেন? নিজে কেন কষ্ট করলি হ্যাঁ?তোর শরীর থেকে কত ক্যালরি শক্তি অপচয় হয়েছে এই সামান্য কাজে ধারণা আছে?" আনায়া কয়েকবার পল্লব ঝাপটালো।তার হৃদস্পন্দন জোরালো হয়ে উঠছে। ইউভান সরে দাঁড়ায় চুলগুলো এক হাতে পিছনে ঠেলে। তার চোখ মুখ কেমন উদ্বিগ্ন হয়ে আছে।আনায়া ফ্যল ফ্যল করে চেয়ে রইল শুধু। ইউভানের কথা তার বোধগম্য হচ্ছে না।তানহা অবাক এর চরম পর্যায়ে চলে যায়।ইউভান তাকে বস্তা বলেছে।কল্পনাও করতে পারিনি ইউভান এমন কথা বলবে তাকে, " আপনি এসব কি বলছেন ইউভান?এই মেয়েটা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল আমি ব্যাথা পেয়েছি সেদিকে আপনার কোন মাথা ব্যথা নেই?অথচ আনায়ার শরীরে শক্তির অপচয় হয়েছে সেখানে এত মাথা ব্যথা?আমি আপনার হবু বউ হয় ভুলে গেলেন আপনি?" ইউভান ঘাড় কাত করে। তার ঘাড়ের শিরা গুলো ফুলে উঠেছে রাগে। চুলগুলো এলোমেলো করে আছড়ে পড়েছে কপালে।চোয়াল শক্ত করে আনায়া দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে, "ইচ্ছে করছে থাপড়িয়ে সবগুলো দাঁত ফেলে দি বেয়াদপ।গায়ের শক্তি তো নষ্ট করলি তুই ধাক্কা মেরে, কিন্তু আমার কোন লাভ হলো না। ছাদের বাইরে বস্তাটাকে ফেলে দিয়ে অন্তত আমার কিছুটা উপকার করতে পারতিস।" আনায়া থতমত খেয়ে তাকায় । লোকটা কি পাগল হয়ে গেল বুঝতে পারছে না সে। তীব্র রোদে তার মাথা ঘুরছে ভো ভো করে ঘুরছে।সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না আর।পা দুটো ঢুলতে থাকে ঠিক সেই মুহূর্তে ইউভান আনায়াকে আঁকড়ে ধরে ব্যালেন্স ঠিক করে। আনায়া দুই হাত দিয়ে ইউভানের শার্ট খামচে ধরে। ইউভান উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে, "কোথায় কষ্ট হচ্ছে সানসাইন?" আনায়া কোন কথার উত্তর দিতে পারে না। আনায়ার অনুভূতির গভীরে বয়ে যাওয়া স্রোত তার সত্ত্বার প্রতিটি কোণায় প্রবাহিত হয়ে তাকে নিঃশব্দে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।তানহা রাগে দুঃখে উঠে দাঁড়ায়। ইউভান এক মুহূর্ত দেরি না করে আনায়াকে পাজকোলে তুলে নেয়।আনায়া কিছুটা সজ্ঞানে আছে বড় বড় করে তাকায় ইউভানের পানে।ইউভান এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকে। তার চোখ মুখে অস্থিরতা। তানহা এসব দৃশ্য দেখে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলতে থাকে, "এর ফল তোকে ভুগতে হবে আনায়া।আমার থেকে আমার ভালবাসাকে দূরে রাখার ফল তোকে চুকাতেই হবে।ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছি তোর জন্য ওয়েট অ্যান্ড সি।" বলেই কাউকে ফোন দেয় তানহা। ---- "কী করছে আপনি? নামান আমাকে বলছি?" ইউভান কঠোর চোখে তাকিয়ে বলে, "তোর গায়ে হাত তুলতে আমার একটুও সময় লাগবে না আনু।" অষ্টাদশীর চোখ করুনায় ছলছল হয়ে ওঠে। তার জানের প্রাণের ফুসফুসে ইউভান ভাইয়ের কাছে ২৪ ঘন্টা থাপ্পড় খাওয়ার কথা শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ সে।আনায়ার বড্ড অভিমান হয় কেন সে সব সময় চড় খাবে?রাগ অভিমান মিশ্রিত কন্ঠে বলে, "আপনি আমাকে মারবেন?" "তুই যদি আর একটা শব্দ বলিস আমি তোকে কোল থেকে নিচে ফেলে দিব।" আনায়া এবার দমে যায়। এই অসভ্য বদমাশ লোকের উপর তার কোন বিশ্বাস নাই। নিজের হবু বউকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার কথা বলতে পারলে তাকে ফেলে দিতে বাধা কি?আনায়া খুব ভালো মতো বুঝতে পেরেছে ইউভান হলো একটা সাইকো।ইউভান আনায়র রুমে প্রবেশ করে বিছানায় শুয়ে দেয় তাকে।আনায়ার শরীরের জ্বর তীব্র মাত্রায় বেড়েছে।বহু কষ্টের চোখ মেলে রেখেছে তার এখন শক্তি নাই যে ইউভানের সাথে ঝগড়া করবে। ইউভান আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আনায়া ভাঙা চোখে সেদিকে তাকিয়ে রইল।মনের মধ্যে হাজারো ধোঁয়াশা ঘুরপাক খেতে থাকে। ইউভানের এমন পাগলাটে আচরণ সে বুঝতে পারছে না। তার জানের প্রাণের কলিজার ফুসফুসের ইউভান ভাই তাকে কিছু বললে তার বুকটা এমনি ফেটে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউভান দুই প্লেট ভাত নিয়ে রুমে প্রবেশ করে আনায়ার সামনে এসে বসলো। আনায়া প্লেটে ভাত দেখে থতমত খেয়ে গেছে। সকালবেলা ভাত কে খায় সে তো কখনো খাইও না। তাহলে কি ইউভান এখন তাকে জোর করে ভাত খাওয়াবে ভাবলে কলিজা কেঁপে উঠছে।ইউভান থমথমে গলায় বলল, "এভাবে হাঁ করে কী দেখছিস? সব তো তোর জন্যই এনেছি।" আনায়া বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে গিয়ে বলল, "এতগুলো আমি একা কীভাবে খাব?" ইউভান ভাত মাখাতে মাখাতে নির্লিপ্ত গলায় বলল, _ "ওই বস তাকে ধাক্কা মারার সময় মনে ছিল না? কত ক্যালারি শক্তি অপচয় হয়েছে হুমমম?এখন সেগুলো পুরোতে হলে খেতে হবে আর এটাই তোর শাস্তি।" আনায়ার ইচ্ছে করছে মাটি খুঁড়ে ভেতরে ঢুকে পড়তে। অথবা পাবনা টিকিট বুক করে ইউবানকে পাঠাতে।আনায়া নিশ্চিত হয় এই লোকটা বিদেশ থেকে না বরং ত্রিশ বছর পর পাবনা থেকে ফিরেছে। ইউভান খাবার আনায়ার মুখের সামনে ধরল।আনায়া কোনো উপায় না দেখে এক লোকমা তুলে মুখে নিল। ধীরে ধীরে খেতে থাকল। অনেকক্ষণ পর এক প্লেট শেষ হয়। আনায়া এবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে। সে ভেবেছে এবার হয়তো খাবারের পালা শেষ কিন্তু মুখ তুলে দেখে ইউভান আরেক প্লেট ভাত মাখাচ্ছে। আনায়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। সে ভয়তে ভয়তে বলে, "ইউভান ভাই প্লিজ আর পারছি না।" ইউভান সরু দৃষ্টিতে আনায়ার দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে, "ভাত খাবি নাকি আমার হাতে চড় খাবি কোনটা? আনায়া কাঁদো কাঁদো ফেস নিয়ে বলে,, "কোনটাই খাব না " "থাপড়িয়ে গাল লাল করে ফেলবো অসভ্য মেয়ে। তোর মুখ থেকে যদি আমি আর একটা কথা শুনেছি।চুপচাপ হা কর। " আনায়া ভয়তে কেঁপে ওঠে। তার আর একটা কথা বলার সাহস নাই। চুপচাপ ইউভান আরেক প্লেট ভাত খাইয়ে দিতে শুরু করে।আনায়া মনে মনে ভীষণ রাগ হয় সে এবার রেগে জোরে কামড় বাসায় ইউভানের হাতে।ইউভান কিছুটা চ জাতীয় শব্দ মুখ থেকে বের করল। বড় বড় চোখ করে আনায়ার পানে তাকিয়ে বলে,, " আমি যদি এখন থেকে কামড় দেই সামলাতে পারবি তো? আনায়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। তার গাল ভর্তি খাবার। লজ্জায় আর কোন কথা বলতে পারে না। তার পেট ফেটে যাচ্ছিল কিন্তু তাও মুখ দিয়ে টু শব্দ করতে পারিনি। জোর জবরদস্তি করে ইউভান আনায়াকে দুই প্লেট ভাত খাইয়ে শেষ করিয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়।প্লেট টেবিলে রেখে ওয়াশরুমে গিয়ে হাত ধুয়ে আসে সে। আনায়া ঠোঁট চেপে নিজের কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে অনেকক্ষণ ধরে পেট ফেটে যাচ্ছে তার। ইউভান আনায়ার অদ্ভুত আচরণ লক্ষ্য করে শুধালো, "এরকম করে আছিস কেন? এমন ভাব করছিস কে যেন তোকে মেরেছে। " এমন কথা আনায়ার কাছে কাটা ঘায়ে নুন ছিটার মত লাগল। কিছুক্ষণ আগে যা করলো এটা কি কম অত্যাচার। এখন এসেছে এমন ভাব করছে যেন কিছু জানেই না। আনায়ার অভিমানে ভেতরে রক্ত টগবগ করে ফুটে উঠছে।সে অভিমানী কন্ঠে বলে, "আপনি এত হার্টলেস কেন ইউভান ভাই? " ইউভান থমকে গেল। কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে ধীরে ধীরে দু কদম এগিয়ে এসে বলে, "তাই নাকি?" আনায়ার ঠোঁট কেঁপে উঠল। গলাটা ভারী লাগছে কিন্তু আজ কিছু বলতে হবে।সে নিজেকে সামলিয়ে পুনরায় বলতে থাকে, _ "আপনার কোনো হৃদয় নেই, জানেন? কারো কষ্ট আপনি বোঝেন না। শুধু জোর করে কথা শোনাতে পারেন।" ইউভান দুই হাত পকেটে ঢুকিয়ে অদ্ভুত এক ভঙ্গিতে মাথা কাত করল। "আর কিছু?" আনায়ার এবার ভীষণ রাগ হল সে এবার কিছুটা উচ্চস্বরে বলে, _ "আপনি এমনই! আমি তো আর সারাজীবন এখানে থাকবো না! একদিন আমার বিয়ে হয়ে যাবে, তারপর আমি চলে যাব। তখন এসব করতে পারবেন না আমার সাথে।" ইউভান ঠোঁটের কোণে হালকা হাসল। চোখে একটুও ভাবান্তর নেই, "জেগে জেগে স্বপ্ন দেখতে থাক।" আনায়া চোখ বড় বড় করে তাকাল।রাগে-অভিমানে ঠোঁট কুঁচকে এল, _" আমি কেন জেগে জেগে স্বপ্ন দেখবো? আমার বিয়ে তো বাস্তবে হবে উহুহু।" ইউভান কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, _ "বড্ড বেশি বলছিস সানসাইন। বেশি কথা বললে কিন্তু আবার এক প্লেট ভাত এনে দেব।" _ "আমাকে খাওয়ার হুমকি দেবেন না।" _"ওষুধ খেয়েছিস চুপচাপ রেস্ট নে। সামনে এক্সাম তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে হবে তোকে।" বলেই চুপচাপ পেছন থেকে ফিরে যেতে লাগলে আনায়ার আরো বেশি অভিমান হয়। অভিমানে জমে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়ের তোলপাড় বাড়তে লাগল। অশান্ত সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো উথাল-পাথাল করছে অনুভূতিগুলো আনায়ার। "বলছি শুনছেন? হঠাৎ ইউভানের পা থেমে গেল অষ্টাদশীর অভিমানী গলার আওয়াজে। সে এবার পেছনদিকে ফিরে অষ্টাদশীর চোখে চোখ রাখে। সেই চোখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এক আকাশ পরিমাণ অভিমান লুকিয়ে আছে। ইউভান কিছুটা ঠান্ডা কণ্ঠে বলে, "শুনছি ম্যাডাম। " আনায়ার চোখ ভিজে এল। এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলল, _"আমার বিয়ে হওয়ার পর আমি চলে গেলে আপনার কি একবারও মনে পড়বে না আমার কথা?" ইউভান গভীর চোখে চেয়ে থেকে নির্লিপ্ত গলায় উত্তর দিল, "পৃথিবীর সবকিছু কি মনে রাখার জন্য হয়?" আনায়ার বুকটা যেন মোচড় দিয়ে উঠল।আরও কিছু বলার চেষ্টা করল, কিন্তু গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হলো না। অন্যদিকে তাকিয়ে মুখে তাচ্ছিল্য হাসি ফুটিয়ে তোলে। ইউভান আর কোন কথা বাড়ায় না রুম থেকে বেরিয়ে যাই। ---- রুহি আজ ভার্সিটি যাইনি কারণ রাত্রে ইউভানের বাংলাদেশে প্রথম কনসার্ট।রুহি মনের আনন্দে লাফাতে লাফাতে বাগানের দিকে এগোই ঠিক সেই মুহূর্তে তার চোখ আটকায় মাত্র গাড়ি থেকে নামা পিয়াসের উপর।রুহি থেমে দাড়ায়। পিয়াস হাতে কয়েকটা ফাইল নিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে হয়তো ইউভানের সাথে দেখা করতে।রুহি পিছন থেকে ডেকে উঠল, "হেয় এলিয়ান।" পিয়াস দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল কিন্তু মেয়েলি কন্ঠের আওয়াজ শুনে থেমে দাঁড়ায়।রুহি দৌড়ে হাঁপাতে হাপাতে পিয়াসের সামনে এসে দাঁড়ায়। পিয়াস দু কদম পিছু হটে।তৎখান রুহি প্রশ্ন করে, "কি করছেন এখানে আপনি?" পিয়াস কোন উত্তর দেয় না পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো। রুহির এবার বড্ড রাগ হয়, "আরেহ আপনি কী বোবা নাকি?নাকি আমাকে ইগনোর করছেন হুমম?" পিয়াস কিছুটা বিরক্ত নিয়ে পেছন ফিরে তাকায় এরপর গম্ভীর কণ্ঠে বলে ওঠে, "আমি এখানে কাজ করতে এসেছি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে না।" রুহি হা হয়ে যায়। সে মনে মনে খুবই ইম্প্রেসড।পিয়াসের ব্যক্তিত্ব রুহির মনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। রুহি পুনরায় পিয়াসের সামনে এসে দাঁড়ায়। “আপনাকে না কিন্তু আমার খুব মনে ধরেছে।” পিয়াস এক মুহূর্ত থমকে গেল। চোখ কুঁচকে তাকাল রুহির দিকে, তারপর নিস্পৃহ গলায় বলল, “হুঁ বেশ তো। এবার সরে দাঁড়ান দেরি হয়ে যাচ্ছে।” রুহি ভ্রু উঁচিয়ে বলল, “মানে? আপনি এমন রোবটের মতো কথা বলছেন কেন? মানুষ একটু অবাক হয়, একটু রিঅ্যাক্ট করে, আপনি তো যেন দেয়ালে কথা বলছি!” পিয়াস চোখ ঘুরিয়ে নিল, যেন তার এই কথায় কোনো আগ্রহ নেই। “হুম, আমি দেয়ালই। এবার আমাকে পার হয়ে যান।” “ওহহো।আপনি তো পুরো পাথর। এত ঠান্ডা মানুষ হতে হয়? আমি বললাম আপনাকে আমার মনে ধরেছে আর আপনি ভাব করছেন আমি বাতাসে কথা বলেছি?” পিয়াস হাঁফ ছেড়ে বলল, “আপনার মনে ধরেছে তাতে আমি কী করব?” “মানে! এটা কোনো কথা হলো? সাধারণত লোকে একটু কেশে, একটু ঘাবড়ে, একটু হাসে। আর আপনি তো কোন রিয়াকশনই দিলেন না।" "ঠিক আছে আপনার কথা বলা শেষ হয়ে গেলে এবার দয়া করে আমাকে যেতে দিন।" রুহি মাথা নেড়ে বলল, “আপনি খুবই ইন্টারেস্টিং, জানেন? আপনার মতো এমন নির্লিপ্ত, ঠান্ডা, অদ্ভুত মানুষ আমি আগে দেখিনি।আমাদের আবার দেখা হবে।” “বাহ ধন্যবাদ। আশা করি ভবিষ্যতে আর দেখবেন না আমাকে।” “নাহ আমি আপনাকে ছাড়ব না।আমার মনে ধরেছে বলেছি, তাই এখন আপনাকে নিয়ে গভীর গবেষণা করব বুঝলেন তাই আমাদের আবার দেখা হবে আপনি চাইলেও দেখা হবে না চাইলেও দেখা হবে।” পিয়াস পাশ কাটিয়ে চলে যেতে যেতে বলে উঠলো, “আপনার গবেষণা সফল না হোক আমি চললাম।” রুহি অবাক নয়নে যাওয়ার দিকে চেয়ে রইল। হঠাৎ মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে তার।তারা ইন্টারেস্টিং লোকটাকে বড্ড মনে ধরেছে। রুহি উরু উরু মন নিয়ে আবার বাগানের দিক এগোতে থাকে। আর গুনগুন করে গান গাইতে থাকে মনের আনন্দে। --- "তুই কী শিওর যাবি না? বাসায় একা থাকতে পারবি তো?প্লিজ ইয়ার চল না একা একা গিয়ে মজা পাবো না।" রুহির কথা শুনে আনায়া বিরক্তি নিয়ে তাকাই।তার শরীরটা আগে থেকে একটু সুস্থ হয়েছে কিন্তু তবুও সে কনসার্টে যেতে চাই না।ইউভানের উপর সে বেজায় নারাজ।আনায়া এবার রাগী কন্ঠে শুধালো, "তু যা প্লিজ আমার এসব গান পছন্দ না তুই তো জানিসই। আর শরীরটাও খুব খারাপ আমাকে জ্বালাস না দয়া করে।" রুহি আর কোনো কথা বলে না।মন খারাপ করে চলে যেতে লাগলো ঠিক তখনই কিছু একটা মনে পড়ায় একটা বালিশ আনায়ার মুখের উপর ছুড়ে মেরে দিল এক দৌড়।আনায়া বালিশ ধরে থতমতো খেয়ে যায়।আনায়া রাগে চিল্লিয়ে বলে, "রুটির বাচ্চা সাহস থাকলে সামনে আসিস আজকে আমার।কাবাব দিয়ে খাবো আজকে তোকে দেখে নিস হুহুহু।" আনায়া বিছানায় গুটিকুটি মেরে শুয়ে পড়ে। ইউভান সে সকালে বেরিয়েছে এখন অব্দি তার খোঁজ খবরও নেয়নি। তার বড্ড অভিমান হয়েছে। সে কেন নির্লজ্জের মত যাবে?আনায়ার ইচ্ছা হচ্ছে যেতে তবুও নিজের ইচ্ছাকে মাটি চাপা দিয়ে চোখ বন্ধ করে। ঘড়ির কাঁটায় প্রায় সাতটা বাজে।আনায়ার মন উশখুশ করছে।বাসায় শুধু তার মা এবং বড়মা আছে আর বাকিরা সব বাইরে।আনায়া আর নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারল না উঠে দাঁড়িয়ে আয়নার সামনে আসে।নিজের প্রতিবিম্ব দেখে আঁতকে উঠল সে।চুলগুলো উস্কো পুরো, চোখ মুখ কেমন ফ্যাকাশে হয়ে পড়েছে। এমনভাবে ইউভান তাকে দেখলে নিশ্চিত পালাতো।আনায়া আলমারি থেকে একটি ড্রেস নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে আসে। --- কনসার্টের বিশাল অ্যারেনা জুড়ে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষায় আছে। স্টেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভক্তরা একসাথে গুঞ্জন তুলছে।স্টেজের ব্যাকড্রপে বড় LED স্ক্রিনে ইউভানের নাম জ্বলজ্বল করছে।সাউন্ড সিস্টেম এতটাই তীব্র যে, পুরো স্টেডিয়াম কেঁপে উঠছে। স্টেজের দু'পাশে ফায়ার স্পার্কস আর মাঝেমাঝে ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। লেজার লাইটগুলো স্টেডিয়ামের আকাশজুড়ে আলোর খেলা দেখাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে লাইভ আপডেট— "গান শুরু হতে চলেছে! ইউভান আসতে আর মাত্র কিছুক্ষণ!" সিকিউরিটি গার্ডরা বারবার অনুরোধ করছে সবাইকে শান্ত থাকতে, কিন্তু উত্তেজিত দর্শকদের বাঁধ মানছে না। আয়ান, রুহি, তানহা সহ বাকিরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে ইউভানের।প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় হয়ে গিয়েছে ইউভান আসছে না।বিষয়টা কেউ বুঝতেও পারছে না।পিয়াস বারবার সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।ইউভান ইচ্ছাকৃতভাবে ঘাড় ত্যাড়ামি করে গ্রিনরুমে আছে বের হচ্ছে না। কারণটা অজানা।ঠিক সেই মুহূর্তে স্টেডিয়ামের ব্যাকস্টেজের এক্সক্লুসিভ VIP প্রবেশদ্বার দিয়ে ধীরে ধীরে ভেতরে প্রবেশ করে এক রমনি।পরনে লাল গাউন,চুলগুলো দুই সাইডে খুলে রাখা এবং মুখে রেড মাস্ক পড়া।রমনিটি ভির পেরিয়ে সামনে এগিয়ে আসলো। তার চোখ দুটো খুঁজে চলল কাউকে। হঠাৎ এক মুহূর্তের জন্য পুরো কনসার্ট ভেন্যুটা নিস্তব্ধ অন্ধকারে। কেউ একজন শ্বাসও নিচ্ছে না । শুধু মোবাইলের ছোট ছোট আলো জ্বলছে মানুষের হাতে। আর সেই নিস্তব্ধতার মাঝে শোনা যায় গিটারের প্রথম ঝংকার।মুহূর্তেই স্টেজের চারপাশ আলোয় ভরে ওঠে। চোখ ধাঁধানো স্পটলাইট সোজা গিয়ে পড়ে ইউভানের ওপর। "ইউভান,বিগ ফ্যান।"চিৎকারে ফেটে পড়ে স্টেডিয়াম। স্টেজের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে সায়ন চৌধুরী ইউভান। শক্ত হাতে গিটার ধরা। তার পরনে কালো স্লিম-ফিট ডিস্ট্রেসড জিন্স আর হালকা শাইনি টেক্সচারের লেদার জ্যাকেট, যার ভেতর সাদা গ্রাফিক টি-শার্ট। জ্যাকেটের হাতা একটু গুটানো, তার নিচে দেখা যাচ্ছে ব্রেসলেট আর রিং। চুলগুলো ঘাড় পর্যন্ত লম্বা যা হালকা ওয়েভি আর ব্যাক-সুইপড স্টাইলে সেট করা। রমনিটি থমকে দাঁড়ালো ইউভানকে দেখে তার হাত আপনা আপনি বুকে উঠে আসে।ইউভানের চোখ রমণীটির উপর স্থীর।রমণীটি কেউ না বরং আনায়া।আনায়া এভাবে এসেছে যেন কেউ তাকে চিনতে না পারে।স্টেজে অনেক কাপাল রা ডান্সের জন্য এগিয়ে আসে। ইউভান গান গাইবে এবং তারা নাচবে।মুগ্ধ দৃষ্টিতে আনায়া তাকায় সেদিকে।মিউজিকের ডিপ বিট ভেসে আসে আনায়ার কানে।তাৎখান ইউভান সবার দিকে চোখ বুলিয়ে তার ধারালো কন্ঠে গান গাইতে থাকে। … He is a hustler, he's no good at all He is a loser, he's a bum, bum, bum, bum He lies, he bluffs, he's unreliable He is a sucker with a gun, gun, gun, gun I know you told me I should stay away I know you said he's just a dog astray He is a bad boy with a tainted heart And even I know this ain't smart গানের মাঝে ইউভান ঠোঁট দিয়ে সেই অদ্ভুত বাঁশি বাজায় যেটা শুনে আনায়ার কলিজা কেঁপে ওঠে। এই বাঁশির সুর সে শুনেছে হ্যাঁ মনে পড়েছে এটা তো সেই টম যেটা ঐদিন ভার্সিটিতে শুনেছিল অন্ধকার রুমে। আনায়ার হাত-পা কাঁপতে থেকে এই মিউজিকের টোনটা তার ভীষণ ভয় করে। তৎক্ষণিক ইউভান আনায়ার দিকে একপলক তাকিয়ে পুনরায় গায়। … But mama I'm in love with a criminal And this type of love isn't rational, it's physical Mama please don't cry, I will be alright All reason aside I just can't deny, I love the guy এভাবে পুরো গানটা শেষ করে ইউভান। দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে গান শুনতে থাকে। তার থেকেও বড় কথা সবার ক্রাশ বয় রকস্টার ইউভানকে দেখার জন্য মেয়েরা মরিয়া হয়ে ওঠে।ভীর ক্রমশ বাড়ছে আনায়া এবার দুকদম পিছু হটে।ইউভান এবার স্টেজ থেকে নামতেই চারদিকে মিডিয়ার ভিড় জমে যায়। ক্যামেরার ফ্ল্যাশিং লাইট একটার পর একটা ঝলসে উঠছে। সাংবাদিকরা একসাথে চিৎকার করছে— "ইউভান! আপনার আজকের গান নিয়ে কিছু বলবেন?" "আপনার নতুন অ্যালবাম কবে আসছে?" "আপনি কি সত্যিই কোনো সম্পর্কে আছেন?" ইউভান কোনো উত্তর দেয় না। চারদিকের মেয়েরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে তার ওপর। কিন্তু আজ অব্দি কোন মেয়ে তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। সেই সুযোগ কাউকে দেয় নি ইউভান।সকল মেয়েরে তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে ইউভানের দিকে।এমনকি ভীড় ঠেলে তানহা এগিয়ে এসে হাত বাড়ায়।কিন্তু ইউভান কাউকে অটোগ্রাফ দেয় না এটা তার রুলস এর মধ্যেই পড়ে না।তখনই সে রমনীটি অর্থাৎ আনায়া হাত বাড়াই অটোগ্রাফির জন্য ইউভানের দিকে। ইউভান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সেই হাতের দিকে। হঠাৎ সেই হাতের উপর আরো শত শত হাত উঠে এলো তার দিকে।কিন্তু ইউভানের চোখ সেই হাতটিকে খুঁজতে থাকে। সেই মুহূর্তে পিয়াসকে চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা করে। পিয়াস বুঝতে পেরে সিকিউরিটি গার্ড আরো বাড়িয়ে দেয়।ইউভান সেখান থেকে চলে আসে। অপরদিকে আনায়া ওয়াশরুমে চলে আসে। তার বুক ধক ধক করছে।নিজেকে সামলানোর জন্য জোরে জোরে নিঃশ্বাস নাই। এরপর আয়নার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে, "তার মানে ঐদিন ভার্সিটির অন্ধকার রুমের ব্যক্তি কি আপনি ছিলেন ইউভান ভাই?" আনায়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। মনে হাজারটা প্রশ্ন তার।ইউভান তার কাছে একটা রহস্য লাগছে বয় কিছু না।ঐদিন অন্ধকার রুমে আনায়াকে ওভাবে ইউভান স্পর্শ করেছে ভাবলেই কেঁপে উঠে সে।ঠিক সেই মুহূর্তে চারদিকের আলো নিভে যায়। আনায়া পুনরায় আতঙ্কিত হয়ে দুই হাতে মুখ চেপে ধরে। মনে পড়ে যায় সেদিনের কথা। তার চারপাশে একদম নিস্তব্ধতা।কেবল তার নিজের নিঃশ্বাসের শব্দ সে শুনতে পাচ্ছে।কিন্তু সেটা কি আসলেই তার নিজের? হঠাৎ… একটা শীতল ভারী নিঃশ্বাস আনায়ার ঘাড়ের কাছে এসে থামে।আনায়ার পুরো শরীর জমে গেল।তার হৃদস্পন্দন এত দ্রুত চলতে লাগল যে বুকের ভেতর এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলো।আনায়া টের পায় দ্বিতীয় ব্যক্তি উপস্থিতি। তখনই একটা শক্ত হাত তার কোমর পেছন থেকে আঁকড়ে ধরে।আনায়া অস্ফুটস্বরে শব্দকরে ওঠে, "আহহ" আনায়ার নিঃশ্বাসটা আরও গভীর হলো।সে বুঝতে পারছে না কে? তার শরীরের প্রতিটা নার্ভ জমে গেলো।আনায়া ছুটার জন্য চেষ্টা করতেই তার কানের কাছে ঠান্ডা গাঢ় পুরুষলী কন্ঠ শুনতে পেলো, "হুশশশশশ ডোন্ট মুভ।" আনায়ার হৃদস্পন্দন যেন কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো বাজছে।সে এই গলার আওয়াজ চিনতে পারবে না এটা অসম্ভব। তার বড্ড কাছের পুরুষের কন্ঠের আওয়াজ এটা।আনায়া কাঁপা কাঁপা কন্ঠে শুধালো, "ইউভান ভাই।" অন্ধকারের মধ্যে ইউভান বাঁকা হেসে মুখ ডুবালো আনায়ার চুলে।মুহূর্তেই আনায়া শিউরে উঠে।ইউভানের ভারী নিঃশ্বাস আনায়ার ত্বক ছুয়ে যাচ্ছিল।ইউভন তখন নেশালু কন্ঠে শুধালো, "বুঝতে এত দেরি কেন হল সানসাইন?" আনায়া চোখ বন্ধ করে কবেই নিঃশ্বাস নেয়। ইউভানের এতটা কাছাকাছি আসা তার জন্য দুষ্কর।সে এবার হুইস্কির কন্ঠে বলে ওঠে, " আমাকে ছেড়ে দিন ইউভান ভাই।" ইউভান পুনরায় গাঢ় কন্ঠে আওরায়, "কেন? তুই তো স্বইচ্ছায় এসেছিস এখানে তাই না?আমি বলেছি আসতে?নিজেই যেহেতু ধরা দিয়েছিস তাই ছাড়া পাবিনা।" আনায়ার গলা কাঁপছে কি করবে সে এখন বুঝতে পারছে না। সেই মুহূর্তে আবার আলো ফিরে আসে।চার দিক আলোকিত হয়ে ওঠে।আনায়া হাফ ছেড়ে বাচে।ইউভান আনায়াকে ছেড়ে দু কদম পিছু হটে।আনায়া এবার পেছন ফিরে ইউভানের পানে তাকায়।ইউভান ঠিক তা দিকে তাকিয়ে আছে।তখনই ইউভান প্রশ্ন করে ওঠে, "তাহলে বল কেন এসেছিস এখানে? তুই তো আসবি না বলেছিলি তাই না?তাহলে কেন এলি হুম?" আনায়া নার্ভাস হয়ে পড়ে। নিজের উপর গালি দিতে ইচ্ছা করছে কেন যে নির্লজ্জের মত আসতে গেল।এখন কি উত্তর দিবে সে ইউভানের। আনায়া ভাবতে ভাবতে বলে উঠে, "ওই না মানে আপনার অটোগ্রাফ নিতে এসেছি আমি।কিন্তু আপনি তো দিলেন না। বড্ড অহংকার আপনার মধ্যে ইউভান ভাই।" ইউভান ভ্রু কুচকায়।তর মনে মবে ভীষন হাসি পায়।তার ঠোঁটের কোণে এক নিঃশব্দ হাসি খেলে গেল। "অহংকার? তার মানে তুই আমার কাছে অটোগ্রাফ চাস?তবে আমি তো যাকে তাকে নিজের অটোগ্রাফ দেইনা কিংবা যেখানে সেখানে সাইন করি না।আমার অটোগ্রাফ নির্দিষ্ট মানুষের জন্য বরাদ্দ।" আনায়ার কাছে কথাগুলো কেমন ভয়ংকর শোনালো।ইউভান এক পা এক পা করে এগিয়ে আসছে।আনায়ার পেছনে দেয়াল। একবার মিশে যায় দেয়ালের সঙ্গে।ইউভান একেবার কাছাকাছি এসে দাড়ায়।আনায়া কাঁপা কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞাসা করল, "ক কী করছেন আপনি হ্যাঁ?" ইউভান গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে শুধালো, "আর ইউ রেডি টু টেক দ্যা অটোগ্রাফ?" মুহূর্তেই আনায়ার শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা একটা স্রোত নেমে যায়।সে কিছু বলতে যাবে তার আগে ইউভান একটি কালো কাপড় চোখে বেধে নেই। আনায়ার বোধগম্য হয় না ইউভানের এহেন আচারণ।তৎক্ষণ ইউভান এক হাত আনায়র কোমড়ে রাখে।ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে কেঁপে ওঠে আনায়া। ইউভান অন্য হাত ধীরে ধীরে আনায়ার কাঁধে রাখল তারপর তার আঙুলের ডগা নামিয়ে আনল পিঠের ওপর দিয়ে। স্পর্শ এতটাই ধীর ছিল যে আনায়ার গা কাঁটা দিয়ে উঠল।কোমলভাবে তার জামার চেইন খুলে ফেলে।ফলস্বরপ জামাটা একটু ঢিল হয়ে নিচে নেমে পড়ে যার কারণে বক্ষের কিছু অংশ উন্মুক্ত হয়।আনায়ার শরীরের প্রতিটি অংশ যেন চুম্বকের মতো ইউভানের দিকে আকৃষ্ট হতে থাকে।আনায়া এবার নিজের আঁখিদ্বয় বন্ধ করে নেয় সঙ্গে সঙ্গে।ইউভান তার হাত উন্মুক্ত পিঠের উপর থেকে ধীরে কোমড়ের কাছে নামিয়ে আনে।ইউভান বুঝতে পারে যে আনায়া কাপছে।সে নিজের মুখটা কানের কাছে এনে ফিসফিসিয়ে আওরায়, "ইউ গেট নার্ভাস ওয়েন আই টাচ ইউ? আনায়া জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে।কোন কথার উত্তর দিতে পারেনা। তার সমস্ত শরীর পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে আছে।ইউভান ধীরে ধীরে ধাতব কলমটি দিয়ে আনায়ার উম্মক্ত বুকের উপরের অংশে সাইন করতে শুরু করে।চোখ বন্ধ করেও নিখুঁত সাইন করছে ইউভান।কলমের ধাতব ঠাণ্ডা স্পর্শ আনায়ার শরীরের মধ্যে ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে । তার শ্বাস এক মুহূর্তের জন্য থেমে যায়।আনায়ার খুব ইচ্ছে হচ্ছে বাধা দেওয়ার কিন্তু পারছে না কোন এক অদৃশ্য শক্তির জন্য।ইউভান ইচ্ছাকৃতভাবে কলমটি দিয়ে ত্বকে আরও চাপ প্রয়োগ করল মুহূর্তে আনায়ার হাত গিয়ে ঠেকে ইউভানের বুকে।সে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।ইউভান নিঃশব্দে হেসে কলমটি সরিয়ে আনে।ইউভান তার হাত সরিয়ে আনায়ার উন্মুক্ত পিঠে রাখে পুনরায়। ঠান্ডা এবং শীতল কন্ঠে ইউভান বলে উঠে, "ডু ইউ ফিল সামথিং ফর মি সানসাইন?" আনায়া চোখ মেলে তাকায়। ইউভানের চোখে এখনো কাপড় বাঁধা।সে এবার নিজের থেকে দৃষ্টি ফেলে তার পরনের বস্ত্র সম্পূর্ণ আগলা হয়ে আছে।সে সেটা ঠিক করবে তার কোন উপায় নেই কারণ ইউভান তাকে নিজের মধ্যে বন্দী করে নিয়েছে সম্পূর্ণ।আনায়া নিজেকে সামলে গম্ভীর কণ্ঠে শুধালো, " আপনি কি করছেন ইউভান ভাই? অন্যজনকে বিয়ে আবার আমায় ছুঁতে চাইছেন।আপনার এই দ্বৈত আচরণের অর্থ কী? কেন এক হৃদয়কে ভেঙে অন্য হৃদয়ের মায়ায় জড়াতে চাইছেন?" ইউভান ঠোঁট কামড়ে ধরে নিজের মুখ আরেকটু এগিয়ে আনে আনায়ার গলার কাছে।আনায়া পুনরায় দুর্বল হয়ে পড়ে কারণ ইউভানের গরম নিঃশ্বাস এখন সে অনুভব করতে পারছে।তখনই পুনরায় ঠান্ডা কণ্ঠ ভেসে আসে, " বিকজ আই এম এ ব্যড বয় এন্ড আই ক্যান ডু এনিথিং... এনিথিং আই ওয়ান্ট।কিন্তু এটা তো আমার প্রশ্নের উত্তর না সুইটি। আ্যনসার মি ইফ আই টাচ ইউ, ক্যান ইউ হ্যান্ডল ইট?" আনায়া চুপ হয়ে যায়। তার ঠোঁট কাঁপে কিন্তু কোনো শব্দ বের হয় না।কি উত্তর দিবে সে?ইউভানের স্পর্শ থাকে মুহূর্তে কাবু করে ফেলেছে।ইউভান তার হাত আনায়ার পিঠে আরেকটু গভীরভাবে স্পর্শ করে।দম বন্ধ হয়ে আসে মুহূর্তেই আনায়ার।ইউভান বাঁকা হাসে সে খুব ভালোমতো বুঝতে পারছে তার স্পর্শ আনায়ার উপর কতটা প্রভাব ফেলছে। ইউভান আবারও নেশালু কন্ঠে শুধালো, "আই উইল টাচ ইউ সো ডিপলি। ইউ নো ওয়াট মিনস ডিপ টাচ?ডিপ টাচ মিনস দ্যা টাচ অফ মাই হ্যান্ডস ওয়েল রিচ এভরি সেনসিটিভ পার্ট অফ ইওর বডি।ক্যান ইউ হ্যান্ডেল মি সানসাইন ? ইউভানের প্রতিটি কথা যেন একেকটি শেকল হয়ে আনায়াকে বন্দি করছে।আনায়া লজ্জায় নুয়ে পরে। কান গরম হয়ে যায় তার একটা মানুষ এতটা নির্লজ্জ কথা কিভাবে বলতে পারে ছিছি। সে এটুকু স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে প্রতিটি নিঃশ্বাসে এখন ইউভানের অস্তিত্ব অমোঘ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যাই হোক সে ইউভানের সামনে দাঁড়াতে চায় না। তার কঠিন কথাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উত্তর দেওয়া তার সাধ্যের বাইরে। "প্লিজ লেট মি গো! প্লিজ।" ইউভান বাঁকা হেসে আনায়ার ড্রেসের জিপ ধীরে ধীরে উপরে ওঠায়। আনায়ার শ্বাস আটকে আসে ইউভান ঠান্ডা আঙুল বারবার আরুর খোলা পিঠ ছুঁয়ে যাচ্ছে।জিপটা লাগানো শেষে ইউভান আনায়াকে ছেড়ে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।আনায়া হাপ ছেড়ে বাঁচে এতক্ষণ তার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। ইউভান এবার তার চোখে বাঁধা কাপড়টা খুলে ফেলে অষ্টাদশীর লাজুক মুখশ্রীর দিকে তাকায়। চলবে,
Golper Alo ব্লগে আপনাকে স্বাগতম, এখানে আপনি পাবেন সেরা ভালোবাসার গল্প।
👉 ⏪ আগের পর্ব | 👉 ⏩ পরের পর্ব
0 মন্তব্যসমূহ